চকোরিয়া হতে অপহৃত কিশোরীকে চট্টগ্রামের বায়েজিদ থেকে উদ্ধার; অভ্যাসগত অপহরণকারী তার সহযোগীসহ আটক।
১। বাংলাদেশ আমার অহংকার এই স্লোগান নিয়ে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে জোরালো ভূমিকা পালন করে আসছে। র্যাব সৃষ্টিকাল থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধ এর উৎস উদঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতারসহ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। র্যাব-৭, চট্টগ্রাম অস্ত্রধারী সস্ত্রাসী, ডাকাত, ধর্ষক, দুর্ধষ চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, খুনি, ছিনতাইকারী, অপহরণকারী ও প্রতারকদের গ্রেফতার এবং বিপুল পরিমাণ অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও মাদক উদ্ধারের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করায় সাধারণ জনগনের মনে আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
২। অপহৃত ভিকটিম ১৬ বছর বয়সের কিশোরী এবং কক্সবাজারের চকোরিয়ার একটি স্কুলে লেখাপড়া করত। ভিকটিমের প্রতিবেশী সাওয়াল করিম তাকে প্রায় সময়ই স্কুলে আসা যাওয়ার পথে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে উত্যক্ত করত। বিষয়টি ভিকটিম তার পিতাকে জানালে ভিকটিমের পিতা সাওয়ালের এর বাবা-মা ও তার নিকটাত্মীয়দের অবগত করেন। এতে সাওয়াল ক্ষিপ্ত হয়ে ভিকটিম এর পিতাকে হুমকি দেয় যে, সে যেকোন সময় তার মেয়েকে অপহরণ করে নিয়ে যাবে।
৩। পরবর্তীতে গত ০১ জুন ২০২৩ ইং তারিখ রাত আনুমানিক ২০৩০ ঘটিকায় ভিকটিমের বাবা-মা ভিকটিমের খালার বাড়িতে বেড়াতে যায়। পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক এ সময় আসামী সাওয়াল করিম অজ্ঞাতনামা আরো ২/৩জন আসামীর সহযোগিতায় ভিকটিমের বাড়ি হতে ভিকটিমকে অপহরণের উদ্দেশ্যে গমন করে। এসময় ভিকটিমের চিৎকারে তার ভাবী ও এলাকার লোকজন এগিয়ে আসলে আসামীরা দ্রুত ভিকটিমকে জোরপূর্বক অপহরণ করে একটি মাইক্রোবাসযোগে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। ভিকটিমের বাব-মা বাড়িতে এসে বিস্তারিত জানার পর আসামী সাওয়াল করিমের বাবা-মার কাছে নালিশ দিলে তারা কোন সঠিক জবাব না দিয়ে হুমকি-ধমকি দিয়ে ভিকটিমের বাবা-মাকে তাড়িয়ে দেন।
৪। এ ঘটনায় ভিকটিমের ভাই বাদী হয়ে কক্সবাজার জেলার চকোরিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন যার মামলা নং ১৪/২৫৭ তারিখ ০৭ জুন ২০২৩ ইং ধারা ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতনম দমন আইন (সংশোধিত-২০০৩) এর ৭/৩০।
৫। র্যাব-৭, চট্টগ্রাম অপহৃত ভিকটিমকে উদ্ধার এবং অপহরণকারীদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারী ও ছায়াতদন্ত অব্যহত রাখে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১২ জুন ২০২৩ইং তারিখে র্যাব-৭, চট্টগ্রামের একটি আভিযানিক দল চট্টগ্রাম মহানগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানাধীন বাংলাবাজার এলাকা হতে বর্ণিত অপহরণ চক্রের মূলহোতা আসামী ১। সাওয়াল করিম(২২), পিতা-বশির আহমেদ এবং ২। বশির আহমেদ, পিতা- মৃত নূর আহমেদ, উভয় সাং-পশ্চিমপাড়া, থানা-চকোরিয়া, জেলা-কক্সবাজারদের গ্রেফতার এবং অপহৃত ভিকটিমকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে গ্রেফতারকৃত আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করে তারা অসৎ উদ্দেশ্যে ভিকটিমকে অপহরণ করেছিল।
৬। উল্লেখ্য, সিডিএমএস পর্যালোচনা করে আসামী সাওয়াল করিমের বিরুদ্ধে কক্সবাজার জেলার চকোরিয়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধন ২০০৩), ধারা: ৭/৩০ মোতাবেক মোট ০৩ টি মামলা পাওয়া যায়। গ্রেফতারকৃত আসামী সাওয়াল করিমকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় সে গত ২০১৮ সালের শুরুর দিকে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া ১৩ বছর বয়সী একটি নাবালিকা মেয়েকে এবং একই বছরের সেপ্টেম্বর মাসে পুনরায় আরেকজন নাবালিকা মেয়েকে অসৎ উদ্দেশ্যে অপহরণ করছিল। সর্বশেষ গত ০১ জুন ২০২৩ইং তারিখে সে তৃতীয়বারের মতো উদ্ধারকৃত ভিকটিমকে অসৎ উদ্দেশ্যে অপহরণ করেছিল বলে স্বীকার করে।
৭। গ্রেফতারকৃত আসামী সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।