নোয়াখালী জেলার হাতিয়া থানার আলোচিত ও চাঞ্চল্যকর যৌতুকের জন্য স্ত্রী হত্যা মামলার প্রধান আসামি ঘাতক স্বামী ইয়াছিন মাহমুদ @ বেলাল’কে চট্টগ্রাম মহানগরী থেকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম।

বাংলাদেশ আমার অহংকার এই স্লোগান নিয়ে র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে জোড়ালো ভূমিকা পালন করে আসছে। র‌্যাব সৃষ্টিকাল থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধ এর উৎস উদঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতারসহ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম অস্ত্রধারী সস্ত্রাসী, ডাকাত, ধর্ষক, দুর্ধর্ষ চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, খুনি, ছিনতাইকারী, অপহরণকারী ও প্রতারকদের গ্রেফতার এবং বিপুল পরিমাণ অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও মাদক উদ্ধারের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করায় সাধারণ জনগনের মনে আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।

নিহত ভিকটিম সুমী আকতার এবং ইয়াছিন মাহমুদ @ বেলাল গত ২৬ জুন ২০২০ ইং তারিখ ইসলামি শরীয়া মোতাবেক পারিবারিকভাবে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। বিয়ের পর তাদের সংসারে একটি কন্যা সন্তান জন্মগ্রহণ করে। স্বামী ইয়াছিন মাহমুদ @ বেলাল ব্যবসার জন্য ভিকটিমের পরিবারের নিকট ০১ লক্ষ টাকা দাবি করলে ভিকটিমের সুখের কথা বিবেচনা করে দাবিকৃত টাকা প্রদান করে। পরবর্তীতে ইয়াছিন মাহমুদ @ বেলাল তার স্ত্রীর নিকট আরোও ০২ লক্ষ টাকা যৌতুক দাবি করলে ভিকটিম টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করে। দাবিকৃত যৌতুকের টাকা না পেয়ে গত ০৩ জুলাই ২০২২ ইং তারিখ স্বামী ইয়াছিন মাহমুদ @ বেলাল ক্ষিপ্ত হয়ে ৬ মাসের অন্তঃসত্তা স্ত্রী’কে এলোপাতারি মারপিট করতে থাকে একপর্যায়ে ভিকটিমের তলপেটে লাথি দিলে ঘটনাস্থলে ভিকটিম মৃত্যুবরণ করে।

উক্ত নৃশংস হত্যার ঘটনায় নিহত ভিকটিমের পিতা আনোয়ার হোসেন বাদি হয়ে নোয়াখালী জেলার হাতিয়া থানায় ০৫ জন’কে আসামি করে একটি হত্যা মামলার দায়ের করেন। যার মামলা নং-১৫/৯০, তারিখ-৩০ জুলাই ২০২২ ইং ধারাঃ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধনী/০৩) এর ১১(ক)/৩০।

র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম বর্ণিত হত্যা মামলার এজাহার নামীয় পলাতক আসামিদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরধারী এবং ছায়াতদন্ত অব্যাহত রাখে। নজরধারীর এক পর্যায়ে র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোপন সূত্রে জানতে পারে যে, বর্ণিত হত্যা মামলার প্রধান আসামি ইয়াছিন মাহমুদ @ বেলাল আইন শৃংখলা বাহিনীর নিকট হতে গ্রেফতার এড়াতে ছদ্মবেশে চট্টগ্রাম মহানগরীর বন্দর থানাধীন পশ্চিম গোসাইল ডাঙ্গা এলাকায় অবস্থান করছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম এবং র‌্যাব-২, ঢাকা এর যৌথ আভিযানিক দল গত ২৯ জানুয়ারি ২০২৪ ইং তারিখ বর্ণিত স্থানে অভিযান পরিচালনা করে আসামি ইয়াছিন মাহমুদ @ বেলাল (৩৫), পিতা- আবুল বাশার @ আবুল কালাম, সাং- আলী বাজার বয়ারচর, থানা-হাতিয়া, জেলা-নোয়াখালী’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে গ্রেফতারকৃত আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে সে বর্ণিত হত্যা মামলার এজাহার নামীয় প্রধান পলাতক আসামি এবং নিহত ভিকটিমের স্বামী মর্মে স্বীকার করে। গ্রেফতারকৃত আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায়, সে আইন শৃংখলা বাহিনীর নিকট হতে গ্রেফতার এড়াতে চট্টগ্রাম মহানগরীর বিভিন্ন স্থানে ছদ্মনামে আত্মগোপন করে ছিল।

গ্রেফতারকৃত আসামি সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নিমিত্তে নোয়াখালী জেলার হাতিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না।