চট্টগ্রামের চান্দগাঁও থানার অস্ত্র মামলায় ১০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত এবং ০৮ মামলার পলাতক আসামি শীর্ষ সন্ত্রাসী মোঃ জুয়েল @ ধামা জুয়েল’কে বাকলিয়া থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম
বাংলাদেশ আমার অহংকার এই স্লোগান নিয়ে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে জোড়ালো ভূমিকা পালন করে আসছে। র্যাব সৃষ্টিকাল থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধ এর উৎস উদঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতারসহ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। র্যাব-৭, চট্টগ্রাম অস্ত্রধারী সস্ত্রাসী, ডাকাত, ধর্ষক, দুর্ধর্ষ চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, খুনি, ছিনতাইকারী, অপহরণকারী ও প্রতারকদের গ্রেফতার এবং বিপুল পরিমাণ অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও মাদক উদ্ধারের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করায় সাধারণ জনগনের মনে আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
চট্টগ্রামের চান্দগাঁও এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী মোঃ জুয়েল @ ধামা জুয়েল @ হামকা জুয়েল নামে সে পরিচিত। কসাইপাড়ায় বসতি, বাবাও ছিলেন কসাই। কয়েক বছর পূর্বেও দুই ভাই বাদশা রাজু ও জুয়েল চাপাতি হাতে এলাকায় মাংস বিক্রি করতেন। পরবর্তীতে চাপাতির বদলে হাতে পিস্তল তুলে নিয়ে দুই ভাইয়ের নাম এখন হামকা রাজু ও ধামা জুয়েল। তারা এখন এলাকার ত্রাস, পুলিশের শীর্ষ সন্ত্রাসীর তালিকায়ও তাদের নাম রয়েছে। অস্ত্র, মাদক, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধে চট্টগ্রামের বিভিন্ন থানায় ০৮টি মামলা রয়েছে তার বিরুদ্ধে। শুধু সন্ত্রাসী কার্যক্রম নয়, কিশোর গ্যাং তৈরিতেও রয়েছে তার একচ্ছত্র নেতৃত্ব। ধামা জুয়েল নগরের বহদ্দারহাট এলাকায় একটি ছিনতাইতারী চক্রকে নিয়ন্ত্রণ করাসহ চাঁদাবাজি ও মাদক ব্যবসায় সে সবসময় সক্রিয়। তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে তার বিরুদ্ধে অনেকেই অভিযোগ করেন। এছাড়াও বারাই পাড়া এলাকার আনোয়ার নামে এক গার্মেন্টস কর্মকর্তাকে কুপিয়ে হাতের কব্জি বিচ্ছিন্ন করেছিল ধামা জুয়েল ও তার সহযোগীরা। হক মার্কেটের সিকিউরিটি গার্ড আব্দুর সবুর, কিশোর জিয়াদ ও নুরুল আলম হত্যাকান্ডে জড়িত ছিল। চাঁদার জন্য আমজাদ হোসেন নামে এক যুবকের দুই পায়ে ড্রিল মেশিনে ছিদ্র করে দিয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে শীর্ষ সন্ত্রাসী ধামা জুয়েল এর বিরুদ্ধে। উল্লেখ্য, ভয়ংকর ‘হামকা গ্রুপ এর প্রধান হামকা রাজু’র ভাই ধামা জুয়েল ইতোপূর্বে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক গ্রেফতার হয়েছিল। সম্প্রতি অস্ত্র মামলায় ১০ বছরের সাজা প্রদান করে বিজ্ঞ আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।
এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোপন সংবাদের মাধ্যমে জানতে পারে যে, চট্টগ্রাম জেলার চান্দগাঁও থানার মামলা নং-১৯(১২)২১, জিআর নং-৪৭৬/২১, বিঃ ট্রাই-৮৩/২০২২ ধারা-১৯- অ ১৮৭৮ সালের অস্ত্র আইনে সাজাপ্রাপ্ত ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক আসামি শীর্ষ সন্ত্রাসী মোঃ জুয়েল @ ধামা জুয়েল চট্টগ্রাম মহানগরীর বাকলিয়া থানাধীন কালামিয়া বাজারে অবস্থান করছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম এর একটি আভিযানিক দল গত ২৩ জানুয়ারি ২০২৪ইং তারিখ আনুমানিক ১৪২০ ঘটিকায় বর্ণিত এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আসামি মোঃ জুয়েল @ ধামা জুয়েল (৩৫), পিতা-জয়নাল আবেদীন জুনু@ জুনু চেয়ারম্যান, সাং-কসাইপাড়া, থানা-চান্দগাঁও, চট্টগ্রাম মহানগরী’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে গ্রেফতারকৃত আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায় সে সূত্রে বর্ণিত মামলায় সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি বলে স্বীকার করে। গ্রেফতারকৃত আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায়, সে বর্ণিত মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হওয়ার পর আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর নিকট হতে গ্রেফতার এড়াতে চট্টগ্রাম মহানগরীর বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন করে ছিল।
উল্লেখ্য যে, সিডিএমএস পর্যালোচনায় গ্রেফতারকৃত আসামি মোঃ জুয়েল @ধামা জুয়েল @হামকা জুয়েল এর বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম জেলার চান্দগাঁও ও বোয়ালখালী থানায় হত্যা চেষ্টা, অস্ত্র, মাদক, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, দ্রুত বিচার আইনসহ সর্বমোট ০৮টি মামলার তথ্য পাওয়া যায়।
গ্রেফতারকৃত আসামি সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নিমিত্তে চট্টগ্রাম মহানগরীর চান্দগাঁও থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে