চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে সংরক্ষিত বনে দস্যূদের যোগসাজশে অবৈধ খনন, বাঁধ নির্মাণ, আধিপত্য বিস্তার ও বন দখল সিন্ডিকেটের প্রধান ও ওয়ারেন্টভুক্ত ১নং পলাতক আসামী ফারহান আহমেদ’কে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম।

১। “বাংলাদেশ আমার অহংকার” এই স্লোগান নিয়ে র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে জোড়ালো ভূমিকা পালন করে আসছে। র‌্যাব সৃষ্টিকাল থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধ এর উৎস উদঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতারসহ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম অস্ত্রধারী সস্ত্রাসী, ডাকাত, ধর্ষক, দুর্ধষ চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, খুনি, ছিনতাইকারী, অপহরণকারী ও প্রতারকদের গ্রেফতার এবং বিপুল পরিমাণ অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও মাদক উদ্ধারের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করায় সাধারণ জনগনের মনে আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।

২। গত ০৬ জুন ২০২৩ইং তারিখ আনুমানিক ১০০০ ঘটিকায় বিট কর্মকর্তা, বাঁশবাড়িয়া বিট, সীতাকুন্ড রেঞ্জ, উপকূলীয় বন বিভাগ, চট্টগ্রাম কর্তৃক বিশ্বস্থ সূত্রে জানতে পারে যে, সীতাকুন্ড রেঞ্জের বাঁশবাড়িয়া বিটের নডালিয়া মৌজার সংরক্ষিত বনে ইউনিটেক্স গ্রুপ লিমিটেড সংলগ্ন রেড়ীবাঁধের পাশে একদল বনদস্যূ স্কাভেটর দিয়ে মাটি খনন করে বাঁধ নির্মাণ করছে। উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে সীতাকুন্ড বিট কর্মকর্তা সঙ্গীয় স্টাফসহ ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখতে পান যে, ধৃত আসামী ফারহান আহমেদেরে নেতৃত্বে তার অন্যান্য সহযোগীরা স্কাভেটর দিয়ে মাটি খননের কাজ সম্পন্ন করছে। বিট কর্মকর্তা ঘটনাস্থলের কাছাকাছি পৌঁছালে ফারহান আহমেদ তার অন্যান্য সহযোগীদের নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।

৩। পরবর্তীতে বিট কর্মকর্তা, বাঁশবাড়িয়া বিট, সীতাকুন্ড রেঞ্জ, উপকূলীয় বন বিভাগ, চট্টগ্রাম কর্তৃক বাদী হয়ে বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, বন আদালত, চট্টগ্রাম বরাবর ফারহান আহমেদকে প্রধান আসামী করে ০৬ জনের নাম উল্লেখ করে একটি বন মামলা দাযের করেন, যার নং- বন-১৩০/২৩, পি ও আর মোকাদ্দমা নং-০১/বিবি/০২/সীতা অব ২০২২-২০২৩ তারিখ ০৬ জুন ২০২৩, ধারা- ১৯২৭ সনের (২০০০ সনে সংশোধিত) বন আইনের ২৬(১ক) (ঙ)।

৪। উক্ত মামলা দায়েরের প্রেক্ষিতে বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, বন আদালত, চট্টগ্রাম কর্তৃক উল্লেখিত ঘটনায় সমস্ত সাক্ষ্য প্রমানের ভিত্তিতে আসামী ফারহান আহমেদসহ তার ০৫ সহযোগীর নামে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করেন। গ্রেফতারী পরোয়ানার পরবর্তী সময়ে সীতাকুন্ড থানা পুলিশ কর্তৃক উক্ত মামলার ০৩ জন আসামীকে আটক করতে সক্ষম হলেও মূল আসামী ফারহান আহমেদ পলাতক থাকে।

৫। এরই প্রেক্ষিতে র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম বিশেষ সংবাদের মাধ্যমে জানতে পারে যে, উক্ত বন মামলার প্রধান ও ১নং ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক আসামী ফারহান আহমেদ চট্টগ্রাম মহানগরীর চকবাজার থানাধীন একটি আবাসিক এলাকায় অবস্থান করছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে গত ১৬ জুলাই ২০২৩ইং তারিখ র‌্যাব-৭, চট্টগ্রামের একটি আভিযানিক দল বর্ণিত এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আসামী ফারনাহ আহমেদ (৫৫), পিতা- মৃত ইকবাল আহম্মেদ, সাং- পরইকরা, থানা- আনোয়ারা, জেলা- চট্টগ্রাম, বর্তমানে, পরিচলাক (লিগ্যাল এন্ড এস্টেট), ইউনিটেক্স গ্রুপ লিমিটেড চট্টগ্রামকে আটক করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সামনে জিজ্ঞাসাবাদে ধৃত আসামী উক্ত বন মামলার ১নং ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক আসামী বলে স্বীকার করে।

৬। গ্রেফতারকৃত আসামী এবং উদ্ধারকৃত আলামত সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না।