দীর্ঘ ১০ বছর পলাতক থাকার পর বান্দরবানের আলীকদমে আলোচিত ও চাঞ্চল্যকর অপহরণ এবং গণধর্ষণ মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত প্রধান পলাতক আসামী সাদেক হোসেন@মুন্না র‌্যাব-৭, চট্টগ্রামের হাতে আটক।

১। “বাংলাদেশ আমার অহংকার” এই স্লোগান নিয়ে র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে জোড়ালো ভূমিকা পালন করে আসছে। র‌্যাব সৃষ্টিকাল থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধ এর উৎস উদঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতারসহ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম অস্ত্রধারী সস্ত্রাসী, ডাকাত, ধর্ষক, দুর্ধষ চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, খুনি, ছিনতাইকারী, অপহরণকারী ও প্রতারকদের গ্রেফতার এবং বিপুল পরিমাণ অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও মাদক উদ্ধারের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করায় সাধারণ জনগনের মনে আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।

২। ভুক্তভোগী ভিকটিম ১৬ বছর বয়সের এবং বান্দরবান জেলার আলীকদম থানার শীলবুনিয়া এলাকায় তার নানীর বাড়িতে থাকতেন। আসামী সাদেক হোসেন মুন্না প্রায়ই ভিকটিমের এলাকায় আসা যাওয়া করত এবং ভিকটিমের পরিচিত ছিল। গত ১৪ মার্চ ২০১২ইং তারিখ ০৫৪০ ঘটিকায় সাদেক হোসেন ভিকটিমকে বিবাহের প্রলোভন দেখিয়ে এবং বিভিন্নভাবে প্রলুব্ধ করে অসৎ উদ্দেশ্যে আলীকদম হতে চট্টগ্রামে নিয়ে আসে। চট্টগ্রাম আসার পর সাদেক হোসেন ভিকটিমকে একটি আবাসিক হোটেলে নিয়ে আসে এবং সেখানে ১৫ ও ১৬ মার্চ ২০১২ইং তারিখ দুই দিন ভিকটিমের ইচ্ছের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে।

৩। পরবর্তীতে সাদেক হোসেন ভিকটিমকে প্রথমে কক্সবাজার জেলার চকরিয়া এবং পরবর্তীতে টেকনাফ থানার একটি অজ্ঞাত বাড়িতে কয়েকদিন আটকে রেখে উপর্যুপরী ধর্ষণ করে। ২১ মার্চ ২০১২ইং তারিখে সাদেক হোসেন ভিকটিমকে কতিপয় দুস্কৃতিকারীর নিকট রেখে সেখান হতে চলে আসে। সাদেক হোসেন চলে আসার পর ৪/৫ জন দুস্কৃতিকারী ভিকটিমকে ২২ হতে ২৫ মার্চ ২০১২ তারিখ পর্যন্ত পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এক পর্যায়ে ভিকটিম কৌশলে একজন দুস্কৃতিকারীর মোবাইল হতে তার এক মামাকে সমস্ত ঘটনা অবহিত করে। ভিকটিমের মামা ভিকটিমকে উদ্ধারের জন্য থানায় অভিযোগ দায়ের করলে আসামীরা বিপদ বুঝতে পেরে গুরুতর আহত অবস্থায় ভিকটিমকে টেকনাফ বাসষ্ট্যান্ড এলাকায় রেখে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে টেকনাফ থানার পুলিশ ভিকটিমকে উদ্ধার করে।

৪। এ ঘটনায় ভিকটিম বাদী হয়ে বান্দরবান জেলার আলীকদম থানায় ১১জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন যার মামলা নং ০২ তারিখ ৩১ মার্চ ২০১২ ইং, জি আর নং ৭২/১২, তারিখ ০১ এপ্রিল ২০১২ইং, ধারা -২০০০ সালে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধনী/০৩ এর ৭/৯/(১)/৯/(৩)/৩০।

৫। র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম বর্ণিত আলোচিত ও চাঞ্চল্যকর অপহরণ এবং গণধর্ষণ মামলার পরোয়ানাভুক্ত পলাতক আসামীদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারী অব্যাহত রাখে। এরই ধারাবাহিকতায় র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম এর একটি আভিযানিক দল গত ০৯ আগস্ট ২০২২ খ্রিঃ তারিখ আনুমানিক ১৪৩০ ঘটিকায় কক্সবাজার জেলার চকরিয়া থানাধীন মৌলভীরকুম বাজার এলাকা হতে বর্ণিত অপহরণ ও গণধর্ষণ মামলার পরোয়ানাভুক্ত ০১নং এবং প্রধান আসামী সাদেক হোসেন@মুন্না(৩২), পিতা-মোঃ খলিল, সাং-পশ্চিম নিজপানখালী, থানা-চকরিয়া, জেলা-কক্সবাজারকে আটক করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে ধৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে সে বর্ণিত মামলার পরোয়ানাভুক্ত আসামী বলে স¦ীকার করে।

৬। গ্রেফতারকৃত আসামী সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রমের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না।