ভূয়া সচিব ও সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ মামলার পলাতক আসামী মোজাম্মেল হক চৌধুরী’কে চট্টগ্রাম মহানগরী হতে আটক করেছে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম।
১। বাংলাদেশ আমার অহংকার এই ¯স্লোগান নিয়ে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে জোরালো ভূমিকা পালন করে আসছে। র্যাব সৃষ্টিকাল থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধ এর উৎস উদঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতারসহ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। র্যাব-৭, চট্টগ্রাম অস্ত্রধারী সস্ত্রাসী, ডাকাত, ধর্ষক, দুর্ধষ চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, খুনি, ছিনতাইকারী, অপহরণকারী ও প্রতারকদের গ্রেফতার এবং বিপুল পরিমাণ অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও মাদক উদ্ধারের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করায় সাধারণ জনগনের মনে আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
২। গত ০৮ মে ২০২৩ তারিখে র্যাব-১, উত্তরা ঢাকা এর এ কটি টহল দল ডিউটি চলাকালীন গোপন সংবাদরে মাধ্যমে জানতে পারে যে, ঢাকা মহানগরীর শেরেবাংলা থানা এলাকায় জনৈক মোজাম্মেল হক চৌধুরী নামের একব্যক্তি অসাধুভাবে নিজেকে সচিব পরিচয় দিয়ে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়ার আশায় প্রতারণার করছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে, র্যাব-১, উত্তরা ঢাকা এর উক্ত টহল দল ঘটনার সাথে জড়িত ব্যক্তিকে গ্রেফতারের লক্ষে গোয়েন্দা নজরদারী শুরু করে। নজরদারীর এক পর্যায়ে জানতে পারে যে, প্রতরাক মোজাম্মেল হক চৌধুরী তার ঢাকা ধানমন্ডীস্থ বাসায় অবস্থান করেছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে, র্যাব-১, উত্তরা ঢাকা এর অভিযানিক দল ঘটনার সাথে জড়িত প্রতারক মোজাম্মেল হক চৌধুরী’কে গ্রেফতারের জন্য গত ০৯ মে ২০২৩ ইং তারিখ অভিযান পরিচালনার পূর্বে প্রতারক মোজাম্মেল হক চৌধুরী কৌশলে পালিয়ে যায় এবং আইন শৃংখলা বাহিনীর নিকট হতে গ্রেফতার এড়াতে দেশের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন করে।
৩। উক্ত ঘটনার সাথে জড়িত প্রতারক মোজাম্মেল হক চৌধুরী’কে গ্রেফতারের লক্ষে ব্যাপক গোয়েন্দা নজরদারী এবং ছায়াতদন্ত শুরু করে। এরই প্রেক্ষিতে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, বর্ণিত প্রতারক মোজাম্মেল হক চৌধুরী চট্টগ্রাম মহানগরীর খুলশী থানাধীন জিইসি মোড় এলাকায় অবস্থান করেছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-০১ এবং র্যাব-০৭ এর যৌথ আভিযানিক দল গত ১৫ মে ২০২৩ ইং তারিখ আনুমানিক ১৭৪৫ বর্ণিত স্থানে অভিযান পরিচালনা করে আসামী মোজাম্মেল হক চৌধুরী (৪৭) @আলম, পিতা- এছাক চৌধুরী, সাং-কলাপাড়া, থানা-পশুরাম, জেলা- ফেনীকে আটক করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সামনে আটককৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে নিজেকে ভূয়া সচিব ও সাংবাদিক পরিচয়ে প্রতারনার কথা অকপটে স্বীকার করে।
৪। ঘটনার প্রতিপৃষ্ঠে জানা যায় যে, প্রতারক মোজাম্মেল হক চৌধুরী নিজেকে কখনো সচিব, কখনো সাংবাদিক এবং কখনো সরকারী উর্দ্ধতন কর্মকর্তা পরিচয় ব্যবহার করে এলজিআরডি মন্ত্রনালয় এর অধীনে মিল্কভিটা প্রজেক্ট, তথ্য মন্ত্রনালয়, পনিসম্পদ মন্ত্রনালয়নসহ বিভিন্ন মন্ত্রাণালয়ের উন্নয়নমূলক কাজ পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে অবসরপ্রাপ্ত সরকারী কর্মকর্তা, শিক্ষক এবং সাধারণ জনগণের নিকট হতে ব্যাংক এবং ব্যাংক পে-অর্ডার কোটি কোটি অর্থ আত্মসাৎ করে আসছে।
৫। উল্লেখ্য যে, গত ০৯ মে ২০২৩ খ্রিঃ তারিখ র্যাব-১ কর্তৃক পরিচালিত অভিযানে প্রতারক মোজাম্মেল হক চৌধুরী পলায়নকালে তার ব্যবহৃত ০২টি গাড়ি (০১টি পাজেরো জীপ, ঢাকা মেট্রো-ঘ ১১-৬৮৭৯ যাহাতে মন্ত্রণালয়ের স্টিকার ও ফ্লাগ স্ট্যান্ড যুক্ত এবং ঢাকা মেট্রো-চ ৫১-৫২৭৮ নোহা গাড়ি যাহাতে SA TV, PRESS লেখা যুক্ত) জব্দ করা হয়। পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে জব্দকৃত গাড়ি ০২টি তল্লাশিকালে গাড়ির ভিতর থেকে প্রতারক মোজাম্মেল হক চৌধুরী এর নামে ০২টি আইডি কার্ড পাওয়া যায়। যার ০১টি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রবেশ পত্র আইডি কার্ড নং-০৫২৯ এবং অপরটি দৈনিক নয়াদেশ এর সাংবাদিক কার্ড নং ২০২১১১০১১১১। এছাড়াও নোহা গাড়ির গ্লাসে SA TV, PRESS লেখাযুক্ত স্টিকার এর ০২টি ছায়াকপি এবং পাজেরো জীপ গাড়ির সামনে বাংলাদেশ সচিবালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ২০১৩ লেখাসহ বিভিন্ন আলামত জব্দ করা হয়।
৬। উল্লেখ্য যে, সিডিএমএস পর্যালোচনা করে ধৃত আসামী মোজাম্মেল হক চৌধুরী এর বিরুদ্ধে ঢাকা মহানগরীর শেরেবাংলা নগর এবং উত্তরা পশ্চিম থানায় টাকা আত্মসৎ এবং প্রতারণা সংক্রান্ত ০২ টি মামলা পাওয়া যায়।
৭। গ্রেফতারকৃত আসামী সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।