চট্টগ্রাম মহানগরীর ডাবলমুরিং এলাকায় নাবালিকা মেয়েকে শারীরিক আঘাতসহ বলপূর্বক ধর্ষনে সহায়তা যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামী মোছাঃ নূরী পালক (২০)’কে ঢাকার হাতিরঝিল এলাকা হতে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম।

যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামী মোছাঃ নূরী পালক (২০)’কে ঢাকার হাতিরঝিল এলাকা হতে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম।

১। বাংলাদেশ আমার অহংকার এই স্লোগান নিয়ে র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে জোরালো ভূমিকা পালন করে আসছে। র‌্যাব সৃষ্টিকাল থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধ এর উৎস উদঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতারসহ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম অস্ত্রধারী সস্ত্রাসী, ডাকাত, ধর্ষক, দুর্ধষ চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, খুনি, ছিনতাইকারী, অপহরণকারী ও প্রতারকদের গ্রেফতার এবং বিপুল পরিমাণ অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও মাদক উদ্ধারের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করায় সাধারণ জনগনের মনে আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।

২। ধর্ষিতা ভিকটিম ১৫ বছর বয়সের এবং নোয়াখালীর একটি স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে লেখাপড়া করত। গত ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২০ ইং তারিখে সে চট্টগ্রাম মহানগরীর আগ্রাবাদ এলাকায় তার খালার বাড়িতে বেড়াতে আসে। আসামী মোছাঃ নূরী পালক (২০) ভিকটিমের খালাতো বোন স্মৃতির বান্ধবী ছিল। গত ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ ইং তারিখ ভিকটিম তার খালাতো বোনের সাথে তাদের এক আত্মীয়ের বাড়িতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হয়। পথিমধ্যে তাদের সাথে নূরীর দেখা হয়। নূরী তাদেরকে জানায় ৫দিন পূর্বে তার বিয়ে হয়েছে এবং তার স্বামীর সাথে দেখা করার জন্য তাদেরকে তার বাসায় যাওয়ার অনুরোধ করে।

৩। নূরীর অনুরোধে ভিকটিম এবং তার বোন নূরীর বাসায় যাওয়ার জন্য রাজী হয়। নুরী তাদের নিয়ে ডবলমুরিং এলাকার একটি আবাসিক ভবনের ৪র্থ তলায় নিয়ে যায়। সেখানে পূর্ব পরিকল্পিতি ভাবে ভিকটিমকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে আসামী মোছাঃ নুরী এর সহযোগতিায় উক্ত বাসায় থাকা চান মিয়া ও অন্যান্য আসামীরা জোর পূর্বক ধর্ষণ করে।

৪। পরবর্তীতে ভিকটিমের মা বাদী হয়ে ০৪ জনকে আসামী করে চট্টগ্রাম মহানগরীর ডাবলমুরিং থানায় একটি মামলা দায়ের করেন যার মামলা নং- ৪৬ তাং- ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ ধারা ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন (সং/২০০৩) এর ৯(১)/৩০ তৎসহ ৩২৩/৩৭৯/৫০৬ পেনাল কোড ১৮৬০। পরবর্তীতে মামলাটি বিচার ও নিষ্পত্তির জন্য বিজ্ঞ নারী ও শিশু ট্রাইবুন্যাল আদালত চট্টগ্রাম মামলাটি বিচারকার্য শুরু করেন। মামলার নম্বর হয় নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইবুন্যাল মামলা নং ২৩৭/২০২১। মামলা দায়েরের পর থেকে আসামীরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন করে। দীর্ঘ তদন্ত শেষে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ০৪ জন আসামীর বিরুদ্ধে পুলিশ রিপোর্ট দাখিল করেন। বিজ্ঞ আদালত দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়া কার্যক্রম শেষে আসামী নুরী পালক’কে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত করেন।

৫। র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, বর্ণিত ধর্ষণ মামলার সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী নুরী পালক আইন শৃংখলা বাহিনীর নিকট হতে গ্রেফতার এড়াতে ঢাকা মহানগরীর হাতিরঝিল এলাকায় আত্মগোপনে আছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব-৭, চট্টগ্রামের একটি আভিযানিক দল গত ০৮ এপ্রিল ২০২৩ ইং তারিখ আনুমানিক ০৬৩০ ঘটিকায় বর্ণিত স্থানে অভিযান পরিচালনা করে আসামী নুরী পালক (২০), পিতা মৃত বশির পালক, সাং- উত্তর গোসাইল ডাঙ্গা, থানা- বন্দর, জেলা-চট্টগ্রাম মহানগরী’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে আটককৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে সে বর্ণিত ধর্ষন মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী মর্মে স্বীকার করে।

৬। গ্রেফতারকৃত আসামী সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না।