চট্টগ্রামের রাউজান এলাকার আলোচিত ও চাঞ্চল্যকর “পাওনাদারের বাড়িতে ঋণ গ্রহীতার লাশ” ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার মূল আসামি মোঃ ইদ্রিস’কে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৭, চট্রগ্রাম।

১। বাংলাদেশ আমার অহংকার এই স্লোগান নিয়ে র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে জোরালো ভূমিকা পালন করে আসছে। র‌্যাব সৃষ্টিকাল থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধ এর উৎস উদঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতারসহ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম অস্ত্রধারী সস্ত্রাসী, ডাকাত, ধর্ষক, দুর্ধষ চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, খুনি, ছিনতাইকারী, অপহরণকারী ও প্রতারকদের গ্রেফতার এবং বিপুল পরিমাণ অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও মাদক উদ্ধারের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করায় সাধারণ জনগনের মনে আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।

২। নিহত ভিকটিম কাজী দিদারুল আলম (৬০) বিগত ৫ বছর পূর্বে বিদেশ হতে দেশে ফিরে জীবিকার তাগিদে ব্যবসা শুরু করে। ব্যবসায় ক্ষতির সম্মুখীন হলে দিদারুল এলাকায় ইদ্রিস সহ বিভিন্ন জনের নিকট টাকা ধার করে। পরবর্তীতে আসামী মোঃ ইদ্রিছ এবং অন্যান্য পাওনাদাররা তাদের পাওনা টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য ভিকটিমকে চাপ দেয় এবং টাকা না দিলে প্রাণ নাশের হুমকি প্রদান করে। ভিকটিম পাওনা টাকা পরিশোধ করতে অপারগ হওয়ায় পাওনারদারদের ভয়ে এলাকা ছেড়ে চট্টগ্রাম শহরে এসে বসবাস শুরু করে।

৩। গত ১৩ মে ২০২৩ ইং তারিখ ভিকটিম কাজী দিদারুল আলম জরুরী প্রয়োজনে এলাকায় আসলে তার পাওনাদার আসামী মোঃ ইদ্রিস, মোঃ ইউনুস এবং তাদের আরও ৬/৭ জন সহযোগীসহ ভিকটিমকে জোরপূর্বক অন্যায়ভাবে ইউনুসের বসতঘরে আটকে রাখে। উক্ত ঘরে আটক রেখে আসামীরা পাওনা টাকা পরিশোধের জন্য ভিকটিমকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে। আসামীরা ভিকটিমকে ‘পাওনা টাকা পরিশোধ না করতে পারলে আত্মহত্যা করছ না কেন’ এই বলে আত্মহত্যার প্ররোচিত করে।

৪। পরবর্তীতে গত ১৬ মে ২০২৩ইং তারিখে দিদারুল আলম তার ভাই বিদেশ থেকে টাকা পাঠিয়েছে বলে ইউনুচ ও তার পরিবারের সদস্যদের নোয়াপাড়ায় পাঠিয়ে দুপুর আনুমানিক ১৪৩০ হতে ১৫০০ ঘটিকার মধ্যে কোনো এক সময় গলায় গামছা দিয়ে ফ্যানের সঙ্গে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে। উক্ত ঘটনায় ভিকটিমের ছেলে কাজী মিনারুল আলম বাদী হয়ে চট্টগ্রাম জেলার রাউজান থানায় ০৪ জন নামীয় এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৬/৭ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন যার মামলা নং-১২/৯৩, তারিখ- ১৭ মে ২০২৩; ধারা-৩৪৩/৩০৬/৩৪ পেনাল কোড ১৮৬০। মামলা দায়েরের পর হতে নিহত ভিকটিমকে অপহরণ করে আত্মহত্যায় প্ররোচনাকারী আসামীরা আইন শৃংখলা বাহিনীর নিকট হতে গ্রেফতার এড়াতে এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে চলে যায়।

৫। র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম বর্ণিত মামলার পলাতক আসামীদেও গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরধারী এবং ছায়াতদন্ত অব্যাহত রাখে। নজরধারীর এক পর্যায়ে র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোপন সূত্রে জানতে পারে যে, বর্ণিত মামলার অন্যতম প্রধান আসামী মোঃ ইদ্রিস চট্টগ্রাম জেলার কর্নফুলি থানাধীন আলতি নগর এলাকায় অবস্থান করছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব-৭, চট্টগ্রামের একটি আভিযানিক দল গত ২৩ মে ২০২৩ ইং তারিখ ১৪৩০ ঘটিকায় বর্ণিত স্থানে অভিযান পরিচালনা করে আসামী মোঃ ইদ্রিস (৫০), পিতা- মৃত নুরুল আমিন, সাং-মোকামীপাড়া, থানা- রাউজান, জেলা- চট্টগ্রাম’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে আটককৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে সে বর্ণিত মামলার এজাহার নামীয় পলাতক আসামি মর্মে স্বীকার করে।

৬। গ্রেফতারকৃত আসামী সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না।