গত ০১ আগস্ট ২০২২ তারিখে রাজশাহীতে ঘরে অন্তসত্বা মেয়ে থাকায় প্রতিবেশীকে উচ্চশব্দে গান বাজাতে নিষেধ করায় নির্মমভাবে খুনের ঘটনায় এজাহারনামীয় প্রধান ০৩ আসামী ছেলে, মা এবং বাবাকে চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড এলাকা হতে আটক করেছে র্যাব-৭ চট্টগ্রাম।
১। “বাংলাদেশ আমার অহংকার” এই স্লোগান নিয়ে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে জোড়ালো ভূমিকা পালন করে আসছে। র্যাব সৃষ্টিকাল থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধ এর উৎস উদঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতারসহ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। র্যাব-৭, চট্টগ্রাম অস্ত্রধারী সস্ত্রাসী, ডাকাত, ধর্ষক, দুর্ধষ চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, খুনি, ছিনতাইকারী, অপহরণকারী ও প্রতারকদের গ্রেফতার এবং বিপুল পরিমাণ অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও মাদক উদ্ধারের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করায় সাধারণ জনগনের মনে আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
২। গত ০১ আগস্ট ২০২২ তারিখ রাত ২১৩০ ঘটিকায় রাজশাহী মহানগরীর শাহমখদুম থানার হরিষার ডাইং এলাকার জনৈক নাহিদ তার বাড়িতে উচ্চ শব্দে গান শুনছিলেন। তাদের প্রতিবেশী মুকুল আলীর (৪৫) মেয়ে অন্তসত্বা হওয়ায় মুকুল আলী নাহিদকে উচ্চ শব্দে গান বাজাতে নিষেধ করেন। নাহিদ তাৎক্ষণিক বক্সের শব্দ কমিয়ে দিলেও মুকুল আলী সেখান থেকে চলে আসলে আবারও শব্দ বাড়িয়ে দেন। মুকুল আলী পুনরায় নাহিদের বাড়িতে গিয়ে উচ্চ শব্দে গান বাজাতে নিষেধ করলে নাহিদ, তার বাবা বকুল আলী, মা ও তার বোন মিলে মুকুলকে গালিগালাজ করেন। এক পর্যায়ে নাহিদ ও তার পরিবারের সদস্যরা লোহার রড দিয়ে মুকুলের মাথায় আঘাত করে। এছাড়া চাকু দিয়ে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করে গুরুতর জখম করেন। মুকুলের চিৎকার শুনে তার ছোট ছেলে শাহীন আলম ও জামাই আলমগীর সেখানে গেলে তাদেরকেও মারধর ও চাকু দিয়ে আঘাত করে জখম করে। পরবর্তীতে স্থানীয়রা মুকুলকে উদ্ধারে এগিয়ে গেলে আসামীরা পালিয়ে যায়। গুরুতর আহত মুকুলকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতেই তিনি মারা যান।
৩। এ ঘটনায় নিহত ভিকটিমের ছেলে মোঃ শামীম ইসলাম বাদী হয়ে রাজশাহী মহানগরীর শাহমখদুম থানায় ০৮ জন নামীয় এবং ৩/৪ জন’কে অজ্ঞাতনামা আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন, যার মামলা নং-০৫ তাং-০২/০৮/২০২২ খ্রিঃ, ধারা-৩২৩/৩২৪/৩২৬/৩০২/৫০৬/৩৪ পেনাল কোড-১৮৬০।
৪। মামলাটি রুজু হওয়ার পর উক্ত মামলার এজাহারনামীয় ৪,৫,৬,৭ এবং ০৮নং আসামীদেরকে রাজশাহী মহানগরীর শাহমখদুম থানার পুলিশ গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। কিন্ত উক্ত মামলার ০১, ০২ এবং ০৩ নং আসামী গ্রেফতার এড়াতে রাজশাহী হতে পালিয়ে আত্মগোপনে চলে যায়। এরই প্রেক্ষিতে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোয়েন্দা নজরদারীর মাধ্যমে জানতে পারে যে, উল্লেখিত হত্যা কান্ডের এজাহারনামীয় ০১, ০২ এবং ০৩ নং আসামী নাহিদ, বকুল আলী এবং মোছাঃ আমেনা চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুন্ড থানাধীন মাদাম বিবিরহাট এবং উত্তর সলিমপুর এলাকায় অবস্থান করছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে গত ১৩ আগস্ট ২০২২ইং তারিখ আনুমানিক ১৭০০ ঘটিকায় র্যাব-৭, চট্টগ্রাম এর একটি আভিযানিক দল বর্ণিত এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আসামী ১। মোঃ নাহিদ হোসেন (২০), পিতা-মোঃ বকুল আলী, ২। মোঃ বকুল আলী (৪৫), পিতা- আছের উদ্দিন এবং ৩। মোছাঃ আমেনা (৪০), স্বামী-মোঃ বকুল আলী সর্ব সাং-হরিষার ডাইং, থানা- শাহমখদুম, রাজশাহী মহানগরীদেরকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে আটককৃত আসামীরা উল্লেখিত হত্যা মামলার মূল পরিকল্পনাকারী এবং এজাহার নামীয় প্রধান আসামী বলে স্বীকার করে।
৫। গ্রেফতারকৃত আসামী সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তরের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।