কক্সবাজারের উখিয়া এলাকায় রুদ্ধশ্বাস অভিযানে মায়ানমার সীমান্ত থেকে নিয়ে আসা ০১ লক্ষ ৬০ হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধারসহ
কক্সবাজারের উখিয়া এলাকায় রুদ্ধশ্বাস অভিযানে মায়ানমার সীমান্ত থেকে নিয়ে আসা ০১ লক্ষ ৬০ হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধারসহ উখিয়ার দুর্ধর্ষ মাদক ব্যবসায়ী বাবু ভাই গ্রুপের প্রধান “লুঙ্গি বাবুইয়া” ও তার ৪ সহযোগী র্যাব-৭, চট্টগ্রামের হাতে গ্রেফতার
১। “বাংলাদেশ আমার অহংকার” এই স্লোগান নিয়ে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে জোড়ালো ভূমিকা পালন করে আসছে। র্যাব সৃষ্টিকাল থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধ এর উৎস উদঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতারসহ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। র্যাব-৭, চট্টগ্রাম অস্ত্রধারী সস্ত্রাসী, ডাকাত, ধর্ষক, দুর্ধষ চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, খুনি, ছিনতাইকারী, অপহরণকারী ও প্রতারকদের গ্রেফতার এবং বিপুল পরিমাণ অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও মাদক উদ্ধারের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করায় সাধারণ জনগনের মনে আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
২। র্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোপন তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, কতিপয় মাদক ব্যবসায়ী ইয়াবা ট্যাবলেট নিয়ে টমটম যোগে টেকনাফ হতে উখিয়া শহরের দিকে আসছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে গত ১১ জুন ২০২২ ইং তারিখ ১১১৫ ঘটিকায় র্যাব-৭, চট্টগ্রাম এর একটি আভিযানিক দল কক্সবাজার জেলার উখিয়া থানাধীন কক্সবাজার-টেকনাফ মহাসড়কে অস্থায়ী চেকপোস্ট স্থাপন করে গাড়ি তল্লাশি শুরু করে। এ সময় একটি টমটম তল্লাশী করে আসামী ১। মোঃ মানিক (২৬), পিতাঃ-আমির হোসেন, গ্রামঃ-উনচিপ্রাং, থানাঃ-টেকনাফ জেলাঃ-কক্সবাজার, ২। শহীদুল ইসলাম বাবু (২০), পিতা-মৃত ফরিদুল আলম, সাং-পালংখালী, থানা: উখিয়া, জেলা-কক্সবাজার, ৩। মোঃ শাহ আলম (৪৪), পিতা:-মৃত সুলতান আহমেদ, সাং -লম্বাবিল থানা: টেকনাফ, জেলা: কক্সবাজার, ৪। মোঃ জোবায়ের (২০), পিতা:নুর আহম্মদ, সাং-চাকমারপুল, থানা: টেকনাফ, জেলা: কক্সবাজার এবং ৫। মোহাম্মদ শাহ(২১), পিতা: মোঃ ইউনুছ, সাং -চাকমারপুল থানা: টেকনাফ, জেলা: কক্সবাজার’দের আটক করে। পরবর্তীতে উপস্থিত স্বাক্ষীদের সম্মুখে আটককৃত আসামীদের হাতে থাকা প্লাষ্টিকের বস্তার ভিতর হতে তাদের নিজ হাতে বের করে দেয়ামতে ইট সাদৃস্য স্কচটেপ ও কাগজ দ্বারা মোড়ানো অবস্থায় মোট ১ লাখ ৬০ হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধারসহ আসামীদের’কে গ্রেফতার করা হয়।
৩। গ্রেফতারকৃত আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায় যে, তারা দীর্ঘদিন যাবৎ মায়ানমার সীমান্ত হতে ইয়াবা সরবরাহকারী সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ইয়াবা সংগ্রহ পূর্বক পরবর্তীতে তা কক্সবাজার, চট্টগ্রাম এবং ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মাদক ব্যবসায়ীদের নিকট পাচার করে আসছে। উদ্ধারকৃত মাদকদ্রব্যের আনুমানিক মূল্য ০৪ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা।
৪। উল্লেখ্য, উখিয়ায় স্থানীয় ভাবে বাবুইয়া গ্রুপ নামে পরিচিত এই গ্রুপ অত্যন্ত চতুরতা ও সুক্ষতার সাথে সীমান্ত ঘেষা নাফ নদীতে মাছ ধরার ছলে লুঙ্গি ও মাছ ধরার জালে বিশেষ কায়দায় ইয়াবা ফিট করে স্থানীয় কিশোর এবং রোহিঙ্গাদের ব্যবহার করে দিনের পর দিন ইয়াবা ট্যাবলেট মায়ানমার থেকে বাংলাদেশে পাচার করে আসছিল। মূলত এই বাবুইয়া গ্রুপ অপেক্ষাকৃত কম বয়সে সর্বনাশা ইয়াবার ব্যবসা করে অধিক অর্থবিত্তের মালিক হওয়ায় তারা খুব সহজেই তাদেরকে উদাহরণ হিসেবে উপস্থাপন করে যুবসমাজ তথা শিশু-কিশোরদেরও অবৈধ অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে এই জঘন্য ব্যবসায় নিয়ে আসছে। ইয়াবা পাচারের জন্য তারা সবসময়ই শিশু-কিশোরদের ব্যবহার করতো। এখানে উল্লেখ্য যে, বাবুইয়া গ্রুপ মায়ানমার সীমান্তে ইয়াবা ট্যাবলেট পাচারের অন্যতম বড় সিন্ডিকেট ছিলো।
৫। গ্রেফতারকৃত আসামীগণ এবং উদ্ধারকৃত মাদকদ্রব্য সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।