র্যাব-৭, চট্টগ্রামের মাদক বিরোধী অভিযানে ২১ কেজি গাঁজা এবং ১২৪ বোতল ফেন্সিডিল উদ্ধার সহ পাঁচজন মাদক কারবারি আটক; মাদক পরিবহনে ব্যবহৃত একটি মোটর সাইকেল জব্দ।

র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সবসময় বিভিন্ন ধরনের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। র্যাবের প্রতিষ্ঠাকাল ২৬ মার্চ ২০০৪ সাল থেকে অদ্যাবধি দেশব্যাপী বিভিন্ন অভিযানে চাঞ্চল্যকর হত্যা ও ধর্ষণ মামলায় ৬,৭৬১ জন গ্রেফতার, অস্ত্র সংক্রান্ত মামলায় ১৪,৬৯৪ জন গ্রেফতারসহ ২০,৩৪২টি অস্ত্র, ২,৬৯,৯২১ রাউন্ড গোলাবারুদ ও ৭,৪৭৬.১ কেজি বিস্ফোরক দ্রব্য উদ্ধার এবং ১ লক্ষ ৫০ হাজারের অধিক মাদক কারবারি গ্রেফতারসহ ৬,২৯২ কোটি টাকা মূল্যমানের মাদক উদ্ধার করে র্যাব। পাশাপাশি ৫,৬৭৮ জন অপহরণকারী গ্রেফতারসহ ৪,১৬৬ জন ভিকটিম উদ্ধার এবং মানবপাচারকারী ১,৮০৪ জন গ্রেফতারসহ ১,৪৫৭ জন ভিকটিম উদ্ধার, ছিনতাইকারী ও ডাকাত গ্রেফতার ১৫,৭০৩ জন, জলদস্যু ও বনদস্যু গ্রেফতার ৯৯০ জন, বিভিন্ন প্রকার প্রতারণারদায়ে গ্রেফতার ৭,৬৪৭ জনসহ অন্যান্য অপরাধে ২৮,৭৮০ জনকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে র্যাব জনগণের সুনাম অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। এছাড়াও প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিভিন্ন অপরাধে দেশব্যাপী র্যাব কর্তৃক ৯৬,৫০৭টি মামলা রুজু করা হয়েছে এবং র্যাব ফোর্সেস কর্র্তৃক এ পর্যন্ত তদন্তকৃত ও তদন্তাধীন ২,৫০০টি মামলা রয়েছে।
র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ০৫ আগস্ট ২০২৪ তারিখ হতে অদ্যাবধি দেশব্যাপী বিভিন্ন অভিযানে চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলায় ৩৮২ জন গ্রেফতার, ধর্ষণ মামলায় ১১৮ জন গ্রেফতার, অস্ত্র সংক্রান্ত মামলায় ৮০ জন গ্রেফতারসহ ৪৮৪টি অস্ত্র, ২০ হাজারের অধিক রাউন্ড গোলাবারুদ উদ্ধার এবং ১ হাজারের অধিক মাদক কারবারি গ্রেফতারসহ বিপুল পরিমান মাদক উদ্ধার করে র্যাব। পাশাপাশি ১২৭ জন অপহরণকারী গ্রেফতারসহ ১১৪ জন ভিকটিম উদ্ধার এবং ছিনতাইকারী ও ডাকাত গ্রেফতার ২০৮ জন, জেল পলাতক ১১৮ জনসহ অন্যান্য অপরাধে ৮৭৮ জনকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে র্যাব জনগণের সুনাম অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
এরই ধারাবাহিকতায় অদ্য ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ইং তারিখ এবং ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ইং তারিখে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম মহানগরীর বায়েজি বোস্তামী এবং ফেনী সদর মডেল থানা এলাকায় পৃথক তিনটি অভিযান পরিচালনা করে ২১.৪০০ কেজি গাজা এবং ১২৪ বোতল ফেন্সিডিল উদ্ধারসহ পাঁচ জন মাদক কারবারিদের আটক এবং মাদক পরিবহনে ব্যবহৃত একটি মোটর সাইকেল জব্দ করতে সক্ষম হয়। অপারেশনের বিস্তারিত নিম্নরূপঃ

র্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, কতিপয় মাদক ব্যবসায়ী একটি যাত্রীবাহী বাসযোগে মাদকদ্রব্য বহন করে বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে খাগড়াছড়ি হতে ঢাকার উদ্দেশ্য নিয়া যাচ্ছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ইং তারিখে আনুমানিক ০১৪৫ ঘটিকায় র্যাব-৭, চট্টগ্রামের একটি আভিযানিক দল ফেনী জেলার ফেনী সদর মডেল থানাধীন মধ্যম রামপুর এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের উপর একটি অস্থায়ী চেকপোস্টের স্থাপন করে গাড়ি তল্লাশি শুরু করে। এসকময় র্যাবের চেকপোস্টের দিকে আসা সন্দেহজনক সৌদিয়া পরিবহন নামীয় একটি যাত্রীবাহী বাসকে থামানোর সংকেত দিলে গাড়ীটি চেকপোস্টের সামনে থামালে দুইজন ব্যক্তি কৌশূলে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টাকালে র্যাব সদস্যরা আসামী ১। আক্কেল আলী প্রকাশ সিরাজ ইসলাম (২১), পিতা-মোঃ বাচ্ছু মিয়া, সাং-বেলছড়ি, থানা-দিঘিনালা, জেলা-খাগড়াছড়ি এবং ২। ইব্রাহিম (৪৮), পিতা- কাদের খালাস, সাং-পূর্বনীলখ, থানা-শিবচর, জেলা- মাদারিপুরদের আটক করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে আটককৃত আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদ ও তল্লাশীকালে তাদের দেখানো ও সনাক্তমতে বাসের মালামাল রাখার বক্সের ভিতর হতে ০১টি ট্রাভেল ব্যাগের মধ্যে বিশেষ কৌশলে রক্ষিত স্কচটেপ দ্বারা মোড়ানো ১০.৪০০ কেজি গাঁজা উদ্ধার সহ আসামীদের গ্রেফতার করা হয়।

র্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, কতিপয় মাদক ব্যবসায়ী চট্টগ্রাম মহানগরীর বায়েজিদ থানাধীন বালুচরা এলাকায় একটি ফ্ল্যাট বাসায় অবৈধ মাদকদ্রব্য ফেন্সিডিল বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে মজুদ করছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে অদ্য ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ইং তারিখ আনুমানিক ০৬৫০ ঘটিকায় র্যাব-৭, চট্টগ্রামের একটি আভিযানিক দল চট্টগ্রাম মহানগরীর বায়েজিদ থানাধীন বালুচরা এলাকায় সুফিয়ান ভিলা নামীয় বাসার ৩য় তলায় একটি ফ্ল্যাট অভিযান পরিচালনা করে আসামী ১। শিভু নাথ প্রকাশ সজিব (২৩) এবং ২। তৃষ্ণা নাথ (২৬), উভয় পিতা-গোপাল নাথ, সাং-আজাদী বাজার, থানা-ফটিকছড়ি, জেলা-চট্টগ্রাম’দের আটক করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে আটককৃত আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদ ও তল্লাশীকালে উক্ত ফ্ল্যাট বাসার বাথরুমের ছাদের উপর সাদা প্লাস্টিকের বস্তার ভিতরে বিশেষ কৌশলে রক্ষিত ১২৪ বোতল ফেন্সিডিল উদ্ধার সহ আসামীদের গ্রেফতার করা হয়।

র্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, কতিপয় মাদক ব্যবসায়ী একটি মোটর সাইকলে যোগে মাদকদ্রব্য বহন করে বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে কুমিল্লা হতে চট্টগ্রামের দিকে নিয়ে আসছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ইং তারিখে আনুমানিক ২৩২০ ঘটিকায় র্যাব-৭, চট্টগ্রামের একটি আভিযানিক দল চট্টগ্রাম মহানগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানাধীন বায়েজিদ বোস্তামী লিংক রোড এলাকায় একটি অস্থায়ী চেকপোস্টের স্থাপন করে গাড়ি তল্লাশি শুরু করে। এসকময় র্যাবের চেকপোস্টের দিকে আসা সন্দেহজনক একটি মোটরসাইকেল’কে থামানোর সংকেত দিলে র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে গাড়িটি থামিয়ে ০১ জন ব্যক্তি কৌশূলে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টাকালে র্যাব সদস্যরা আসামী মোঃ নাঈম উদ্দিন (২৭), পিতা- মোঃ তাজুল ইসলাম, সাং-টিলাপাড়, থানা-ফটিকছড়ি, জেলা- চট্টগ্রাম’কে আটক করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে আটককৃত আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদ ও তল্লাশীকালে তার সাথে থাকা একটি ব্যাগের ভিতর হতে ১১ কেজি গাঁজা উদ্ধার সহ আসামী’কে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায় যে, তারা পরস্পর দীর্ঘদিন যাবৎ সুকৌশলে মাদকদ্রব্য গাঁজা এবং ফেন্সিডিল খাগড়াছড়ি এবং ফেনী জেলার সীমান্তবর্তী এলাকা হতে স্বল্প মূল্যে সংগ্রহ করে পরবর্তীতে চট্টগ্রাম জেলা এবং মহানগরীর বিভিন্ন মাদক ব্যবসায়ী ও মাদক সেবনকারীদের নিকট অধিক মূল্যে বিক্রয় করে আসছিল। উদ্ধারকৃত মাদকদ্রব্যের আনুমানিক মূল্য ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
গ্রেফতারকৃত আসামীদের এবং উদ্ধারকৃত আলামত সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে তাদের’কে চট্টগ্রাম মহানগরীর বায়েজিদ বোস্তামী এবং ফেনী সদর মডেল থানা পুলিশের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।